কাঁধের ব্যথার কী?
পরিচিত যেসব ব্যথা আমাদের বেশি পীড়া দেয়, তার মধ্যে সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক হচ্ছে কাঁধের ব্যথা। এটা ফ্রোজেন শোল্ডার হিসেবে পরিচিত।
এ সমস্যা হলে হাত বিশ্রামে থাকলে বা আক্রান্ত হাত দিয়ে কোনো কাজ না করলে সাধারণত ব্যথা অনুভূত হয় না। কিন্তু হাত দিয়ে কিছু ধরতে গেলে বা ওঠাতে গেলে কাঁধে বিদ্যুচ্চমকের মতো তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।
অনেকে ব্যথায় রাতে ঘুমাতে পারেন না। শরীরের আক্রান্ত পাশে ভর দিয়ে শুতে গেলে ঘুম ভেঙে যায়। গভীর রাতে তীব্র ব্যথা শুরু হয়। একবার ব্যথা শুরু হলে আর থামতে চায় না। এমনকি ব্যথার ওষুধেও কাজ হয় না। রোগীরা গরম পানির শেক, মালিশ ইত্যাদি দিতে থাকেন। এসবেও কাজ হয় না।
কাঁধের ব্যথার কারণ:
১. পুরাতন জখম: পুরাতন জখম বা আঘাতের কারণে কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
২. মাংসপেশী দুর্বলতা: পর্যাপ্ত আবদার না থাকলে মাংসপেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কাঁধে ব্যথা উৎপন্ন হতে পারে।
৩. বৃদ্ধাবস্থা: বৃদ্ধি বয়সে মাংসপেশীর জন্য স্নায়ুতন্ত্রে পরিবর্তন হয়, যা কাঁধের ব্যথা উৎপন্ন করতে পারে।
৪. কার্যসংক্রান্ত চাপ: দীর্ঘসময় ধরে কাজ করা, কৌশল বা অধিক শারীরিক চাপের কারণে কাঁধে ব্যথা হতে পারে।
রাতে কাঁধের ব্যথা প্রতিরোধ
রাতে ঘুমানোর সময়ে কাঁধের ব্যথা বেশ সাধারণ একটি সমস্যা। এটি আমাদের দিনের গতির ভারে কাজ করার সময়ে বা ঘুমানোর পদ্ধতির কারণে হতে পারে। কাঁধের ব্যথার এই সমস্যার সামগ্রিক কারণ, হল প্রাকৃতিক কাঁধের গঠনের অস্তিত্ব বা গঠনে বিভিন্ন ধরনের অস্থিরতা। তবে, বিশেষভাবে এই সমস্যার পেছনে প্রারম্ভিক কারণ হল মাংসপেশীতে অস্থিরতা, যা রাতে আরও বেশি প্রকারের ব্যথা উৎপন্ন করে।
কাঁধের ব্যথার মোকাবেলা
১. অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা: দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত জরুরী না হলে কাঁধের ব্যথার জন্য চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেওয়া আপনার প্রকৃতিতে যার কোনও অস্থিরতা বা অন্যান্য সমস্যার কারণ সনাক্ত করতে পারেন।
২. কার্যকর ব্যায়াম: কাঁধের ব্যথার সাথে দেখা করা হয়েছে যে কার্যকর ব্যায়াম কাঁধের ব্যথা কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে।
৩. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: উপযুক্ত পুষ্টিতত্ত্ব, যত্ন এবং নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে শুয়ে ঘুমাতে কাঁধের ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে
কাঁধের ব্যথার ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা:
কাঁধের ব্যথার জন্য ফিজিওথেরাপি একটি দ্বিমুখী চিকিৎসা পদ্ধতি যা আপনার কাঁধের ব্যথা ও লক্ষণগুলি নির্ধারণ করে তা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি আপনার সমস্যার ধরণ ও কারণে নির্ভর করে। কিছু সাধারণ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার ধরণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
ব্যাসিক প্রস্তুতির ব্যায়াম: এই ব্যায়ামগুলি কাঁধের মাংশপেশীগুলির শক্তি ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করে।
অভ্যন্তরীণ ফিজিওথেরাপি: এটি আপনার কাঁধের মাংশপেশীগুলির স্থিতি নিরীক্ষণ এবং তাদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত পাঠাতে মানা হয়।
তাপোদ্বেগ চিকিৎসা: গরম বা ঠান্ডা প্যাক এবং অন্যান্য তাপমুখী চিকিৎসার সাহায্যে ব্যথা কমানো যায়।
শক্তি ও চাপ ব্যয়াম: এই ব্যায়ামগুলি মাংশপেশীগুলির শক্তি ও টেনশন কমাতে সাহায্য করে।
ম্যাসেজ থেরাপি: ম্যাসেজ কাঁধের মাংশপেশীগুলির মৃদুতা ও স্নায়ু ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার সফলতা হাসানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো চিকিৎসকের নির্দেশনামূলকভাবে অনুসরণ করা। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যায়াম, উপায়, ও সময়সূচী অনুসরণ করা উচিত। এটি কাঁধের ব্যথার উপচারে প্রভাবশালী হতে সাহায্য করে।